হাদীসকে আঁকড়ে ধরার প্রতি ইমামগণের উপদেশ

চার ইমামকে (রহঃ) আমাদের তরফ হতে আল্লাহ উত্তম বদলা দান করুন। তাঁরা প্রত্যেকেই তাদের নিকট যে হাদীস সমূহ পৌঁছেছিল সে অনুযায়ী ইজতেহাদ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে যে মতানৈক্য হয়েছিল তার বিশেষ কারণ হল এই যে, কারো নিকট কতক হাদীস পৌঁছেছিল যা অন্যের নিকট পৌঁছেনি, কারণ তদানীন্তন যুগে হাদীস সংকলিত হয় নি। আর হাদীসের হাফেযগণ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন, কেউ ছিলেন হিজাযে (মক্কা ও মদীনায়), আর কেউ ছিলেন শ্যামে (সিরিয়ায়), কেউ বা ইরাকে, আবার কেউ মিসরে অথবা অন্যান্য ইসলামী দেশে। সে যুগে এক স্থান হতে অন্য স্থানের যোগাযোগ ছিল অত্যন্ত কঠিন ও কষ্টকর। কাজেই আমরা দেখতে পাই যে, ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) যখন ইরাক ছেড়ে মিসরে গেলেন তখন তিনি ইরাকের পুরাতন মাযহাব ত্যাগ করলেন। কেননা ততক্ষণে তাঁর সামনে বহু নুতন নুতন সহীহ হাদীস উপস্থাপিত হয়েছিল। 

ইমামগণের মধ্যে মতানৈক্যের একটি উদাহরণ উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইমাম শাফেয়ীর (রহঃ) মতে কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে ওযু নষ্ট হয়ে যায়। অপরদিকে ইমাম আবু হানিফার (রহঃ) মতে ওযু নষ্ট হয় না। দুই ইমামের মতামতের এই বৈষম্যতার কারণে আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য হল, কুরআন ও সহীহ হাদীসের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। কারণ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: 
“অতঃপর কোনো ব্যাপারে তোমরা যদি একে অপরের সাথে মতবিরোধ করো, তাহলে সে বিষয়টি (ফয়সালার জন্যে) আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও, যদি তোমরা (সত্যিকার অর্থে) আল্লাহর ওপর এবং শেষ বিচার দিনের ওপর ঈমান এনে থাকো! (তাহলে) এই পদ্ধতিই হবে (তোমাদের বিরোধ মিমাংসার) সর্বোত্কৃষ্ট উপায় এবং বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহের ব্যাখ্যার দিক থেকেও (এটি) হচ্ছে উত্তম পন্থা। (সূরা আন্ নিসা, আয়াত ৫৯)

আর আমরাতো কেবল আল্লাহর নিকট হতে অবতারিত কুরআনের অনুসরণ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর রাসূল (সঃ) সহীহ হাদীসের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা দান করেছেন। তাই এরশাদ হচ্ছে: 
“(হে মানুষ, এ কিতাবে) তোমাদের মালিকের কাছ থেকে তোমাদের কাছে যা কিছু পাঠানো হয়েছে তোমরা তার (যথাযথ) অনুসরণ করো এবং তা বাদ দিয়ে তোমরা অন্য কোনো অলি আউলিয়ার পৃষ্ঠপোষকদের অনুসরণ করো না; (আসলে) তোমরা খুব কমই উপদেশ মেনে চলো।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত ৩)

সত্য কোন সময় একাধিক হতে পারে না। প্রকৃত সত্য হল, ওযু ভঙ্গের কারণগুলির মধ্যে কোন মহিলাকে স্পর্শ করা অন্তর্ভুক্ত নয় বিধায় কোন মহিলার শরীর স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হবে না। 

সুতরাং কোন মুসলিমের সামনে কোন সহীহ হাদীস উপস্থাপিত হলে তাকে একথা বলা জায়েয নয় যে, এটা আমাদের মাযহাব বিরোধী। কারণ সমস্ত ইমামের ইজমা (ঐকমত্য) হচ্ছে যে সহীহ হাদীস গ্রহণ করবে এবং ঐ সমস্ত মতবাদ পরিহার করবে যা সহীহ হাদীসের পরিপন্থী।

20:51

Post a Comment

[blogger]

MKRdezign

TAGS

২০ রাকাত তারাবিহ (1) ৪ ইমামের জীবনী (4) ৭৩ দল (1) আমল (2) আল্লাহ ও রাসূল (ﷺ) কে ভালবাসা (2) আসমাউন নবী (ﷺ) (1) আহলুস-সুন্নাহ (2) আহলে কুরআন ফির্কা (1) ইনসান (1) ইবনে তাইমিয়্যা (1) ইমান (3) ইলমে গায়েব (1) ইসলামের ভিত্তি (1) উসীলা (8) এপ্সঃ আল আউলিয়া (54) ওহাবী (3) কবর ও মাযার জিয়ারত (2) কিতাবঃ ৪০ হাদিস মুখস্ত রাখার ফজিলত (41) কিতাবঃ আকাইদে আহলুস সুন্নাহ (7) কিতাবঃ ইসলামের মূলধারা [মঈনুদ্দীন আশরাফী] (21) কিতাবঃ উচ্চস্বরে জিকিরের বিধান [ইমাম সুয়ূতী] (2) কিতাবঃ নবীগণ (আঃ) স্বশরীরে জীবিত - ইমাম সুয়ূতী (রহঃ) (4) কিতাবঃ বিভ্রান্তির অবসান (16) কিতাবঃ মহানবী (ﷺ) নূর [হাদ্দাদ দামেশকী] (1) কিতাবঃ শাহ নেয়ামাতুল্লাহ (রহঃ)'র ভবিষ্যদ্বাণী (1) কিতাবঃ সালাফীদের জবাবে কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ [ইকরাম উদ্দীন] (14) কিতাবুল ফিতান (1) কিয়াম (1) ক্বদরিয়া ফির্কা (1) খারেজী (3) জামাতে ইসলামের ভ্রান্ত আকিদা (2) জাহমীয়া ফির্কা (1) তরিকত (1) তাবলীগ (2) দাজ্জাল (1) দুরুদ (1) দেওবন্দী আক্বিদা (1) দোয়া কবুলের নিয়ম (1) নজদী (1) নারী (1) নিয়্যত (1) বাতিল ফির্কা (2) বায়আত গ্রহণ (3) মওদুদী মতবাদ (2) মক্কা মদিনার ফজিলত (1) মাক্বামে মাহমুদ (1) মাযহাব (13) মাযহাবের তাকলিদ (12) মাযার সম্পর্কিত (5) মিলাদুন্নবী (ﷺ) (1) মু'মিন (2) মুজরিয়া ফির্কা (1) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নবুওয়াত (1) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পিতা-মাতা ইমানদার (1) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বন্টনকারী (1) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বেনজীর-বেমিসাল (1) লেখক ফোরাম (2) শবে বরাত (1) শানে আউলিয়া (20) শানে আহলে বাইয়াত (1) শানে মোস্তফা (ﷺ) (6) শানে সাহাবায়ে কেরাম (1) শাফায়াত (1) শিয়া (3) শিরিক (1) সদকায়ে জারিয়াহ (1) সালাত (7) সৌদি আরবের ইতিহাস (1) হক বাতিলের পরিচয় (2) হাদিস প্রচারে সতর্কতা (1)

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget